Scrollwhite

মাহমুদুল হক ফয়েজ My name is Mahmudul Huq Foez, I am a journalist, leaving in a small town, named Noakhali , which is situated in coastalzila of Bangladesh

হোমপেইজ | আর্টিকেল | ছোটগল্প | ফিচার | মুক্তিযুদ্ধ | বনৌষধি | সুস্বাস্থ্য | কবিতা | যোগাযোগ

আমজনতার তথ্য পাওয়ার আধিকার



আমজনতার তথ্য পাওয়ার আধিকার
মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ

থ্যের উপর নির্ভর করে প্রতিটি মানুষ তার জীবন যাপন শুরু করে। দিন শুরুর সাথে সাথে আপনা আপনি তার কাছে কিছু তথ্য হাজির হয়ে যায়। অবচেতন মনেই সে সেই তথ্যের উপর ভর করে প্রথম পদক্ষেপটি দেয়। কিন্তু রাষ্ট্রের একজন গর্বিত নাগরিক হিসাবে প্রাথমিক এই তথ্যের উপর নির্ভর করে তার দিন চলেনা। তাকে খেতে হয় চলতে হয় কৃষিকাজ করতে হয় জমি জমা কিনতে হয় বেচতে হয় খাজনা ট্যাক্স ইত্যাদি দিতে হয় রেল বাস ষ্টিমারে চলতে হয় স্কুল কলেজ অফিস আদালত করতে হয়। অর্থাৎ একজন নাগরিক হিসাবে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে যাবতিয় কাজ তথ্যের উপর নির্ভর করে চলতে হয়। যেহেতু রাষ্ট্রের প্রতি তার কিছু দায়িত্ব রয়েছে তাই সঙ্গত কারনে তার প্রতি রাষ্ট্রের কিছু দায়িত্বও বর্তায়। তার চলাফেরা কাজ কর্ম যেহেতু তথ্যের উপর নির্ভরশীল তাই প্রতিটি নাগরিকের নির্ঝঞ্জাট জীবনের জন্য তথ্য প্রদান করা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু অনেক অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মত বাংলাদেশের নাগরিকরা রাষ্ট্রের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘোরপাকের মধ্যে পড়ে। গ্রামের একজন সাধারণ মানুষ আজও জানেনা রাষ্ট্র জিনিষটা কি, রাষ্ট্রের প্রতি তার দায়িত্ব কিংবা তার প্রতি রাষেট্রর কি দায়িত্ব। একজন নাগরিক হিসাবে প্রাথমিক এই তথ্যটি জনা থাকলে সেই নাগরিকের জীবন যাপনে অনেক গুলি বিষয়ই খোলাসা হয়ে যায়।যেমন ধরা যাক রাষ্ট্রের কোনো সম্পদ চুরি ধ্বংস কিংবা আত্মস্যাৎ করা যাবেনা। রাষ্ট্রিয় সম্পদ রা করা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। একজন নাগরিক যদি জানেন রাষ্ট্রিয় সম্পদ চুরি ধ্বংস কিংবা আত্মস্যাতের জন্য কি কি শাস্তির বিধান রয়েছে। তাহলে স্বভাবতই সেই নাগরিকটি সতর্ক হয়ে যাবেন। কিংবা একজন কথিত আসামীর প্রতি পুলিশ কি রকম আচরণ করতে পারবে এ তথ্য যদি জানা থাকে তাহলে সেই আসামীর প্রতি কোনো অন্যায় আচরণ হলে তার প্রতিকার চেয়ে সে আসামী মামলা করতে পারেন।দেখা যায় কোনো নাগরিকের ব্যাক্তিগত কোনো সম্পদ চুরি কিংবা ডাকাতি হলে তিনি থানায় গিয়ে মামলা করেন। কিন্তু তাঁর চোখের সামনে রাষ্ট্রের জমি সম্পদ লুঠ হয়ে গেলেও তিনি কোথাও মামলা করতে সচেষ্ট হননা। অথচ সারা দেশে অবাধে খাসজমি নদী সহ বিপুল পরিমানে রাষ্ট্রিয় সম্পত্তি লুঠ হয়ে যাচ্ছে কেউ ঘুনারেও তাকিয়ে দেখছেনা।থানায় আসামীর উপর পুলিশের নির্যাতন নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা কিন্তু এ নিয়ে কেউ তেমন রা করেনা। অথচ অনেক েেত্রই দেখা যায় আসামীরা মনে করে থানায় পুলিশের ঠেঙ্গানী খাওয়াটা নেহায়েত স্বাভাবিক একটা ব্যাপার।গ্রামের সাধারণ একজন মানুষ শহরে এসে সামান্ন এটি তথ্যের অভাবে কি পরিমান দুর্ভোগ ও হয়রানীর শিকার হন তা শুধু একজন ভূক্তভোগীই অনুধাবন করতে পারেন। হঠাৎ নতুন এসে মানুষটির শহরের অনেক কিছুই চেনা জানার কথা নয়। মামলা মকদ্দমা কিংবা কোর্ট কাছারিতে এসে তিনি দালালদের নানান খপ্পরে পড়েন । অনেক সময় দেখা যায় সর্বস্ব হারিয়ে তাকে আবার গ্রামে ফিরে যেতে হয়। কিন্তু মানুষটির কাঙ্খিত নির্দিষ্ট তথ্যটি জানান দিতে সংশ্লিষ্ট কতৃপ কখনোই তেমন সচেষ্ট নন কিংবা উদ্যোগী হতেও দেখা যায়না।একজন সাধারণ নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র ও সরকার দায়বদ্ধ। তাকে তার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সরবরাহ করা রাষ্ট্র বা সরকারের অবশ্য কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
বাংলাদেশের জনগণের তথ্য লাভের অধিকার সম্বলিত একটি অধ্যাদেশ ২০ অক্টোবর ২০০৮ সালে সরকার কতৃক প্রকাশিত হয়েছে। এই অধ্যাদেশের বিধানগুলির মধ্যে রয়েছে,‘কতৃপরে নিকট হইতে প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য লাভের অধিকার থাকিবে এবং কোন নাগরিকের অনুরোধের প্রেেিত সংশ্লিষ্ট কতৃপ তাহাকে তথ্য সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে’।
মফস্বল শহরের বিভিন্ন সরকারি অফিসে আসলে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে তথ্য পেতে সাধারণ মানুষদের অনেক বেগ পেতে হয়। অথচ প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সেই নির্দিষ্ট কতৃপরে তথ্য প্রদান করা বাধ্যতা মূলক। গ্রামের সাধারন মানুষ জমি বেচাকেনা, নিবন্ধন পর্চা ইত্যাদির জন্য প্রতিনিয়তই আসতে হয় ভূমি অফিসে। কিন্তু দেখা যায় এই অফিসেই সবচেয়ে প্রতারিত হয় সাধারণ মানুষ। কোথায় কার কাছে গেলে তার কাজ হবে, কোথায় কত টাকা লাগবে এই সাধারণ তথ্য এ সব অফিস থেকে পাওয়া যায়না। ফলে সেই মানুষটিকে নানান ভোগান্তির শিকার হতে হয়। প্রায় েেত্র দেখা যায় সে অফিসের দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা কর্মচারীরা সাধারণ মানুষের কাছে তথ্য গোপন করে ফায়দা লুটে নেয়।
গ্রামের সাধারণ মানুষ বেশীর ভাগই নিরর বা স্বল্প শিতি। প্রত্যেক সরকারী অফিসে এই সাধারণ মানুষদের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসের সব রকম সেবা প্রদানের তথ্য আগেভাগেই জানানোর ব্যবস্থা করা আবশ্যক। কোনো তথ্য ঘাটতি যেন সাধারণ মানুষদের মধ্যে না থাকে সে ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার একটি তথ্য কমিশন গঠন করেছে। এখন সরকারের এ বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। তথ্যের অভাবে কোন সাধারণ মানুষ যেন হয়রানীর শিকার না হন।


মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ
গবেষক, সংবাদকর্মী
নোয়াখালী
e-mail: mhfoez@gmail.com




আমজনতার তথ্য



No comments:

Post a Comment

About Me

My photo
Mahmudul Huq Foez Free-lance journalist, Researcher.