Scrollwhite

মাহমুদুল হক ফয়েজ My name is Mahmudul Huq Foez, I am a journalist, leaving in a small town, named Noakhali , which is situated in coastalzila of Bangladesh

হোমপেইজ | আর্টিকেল | ছোটগল্প | ফিচার | মুক্তিযুদ্ধ | বনৌষধি | সুস্বাস্থ্য | কবিতা | যোগাযোগ

মুখ থুবড়ে পড়ে আছে নোয়াখালী সেচ প্রকল্প



মুখ থুবড়ে পড়ে আছে নোয়াখালী সেচ প্রকল্প

মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ


ভাটির দেশ হিসাবে পরিচিত বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা পলিমাটি বিধৌত উর্বর কৃষি প্রধান এলাকাএ উর্বর ভূমিকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগিয়ে কৃষি উৎপাদনে কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ আজ অবধি কেউ গ্রহণ করেনি¯^vaxbZv পরবর্তী সময় এ লক্ষ্যে কয়েকটি সেচ প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হলেও আজও সেগুলো তিমিরেই বন্দী হয়ে আছেবিভিন্ন সরকারের আমলে দফায় দফায় নানান আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত নোয়াখালী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নিএ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের ৩৭০ বর্গমাইল এলাকা সেচ সুবিধা পাবে এবং প্রতি বছর ৫০ হাজার টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন সম্ভব হবে বলে পরিকল্পনাবিদরা মনে করছেন

¯^vaxbZv পরবর্তী এ পর্যন্ত হিসাবে টাকার অঙ্কে যা দাঁড়ায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকারও বেশীএ এলাকার মূল ভূ-খন্ডকে রক্ষার জন্য লক্ষীপুরের চর রমনীমোহনে মেঘনা নদীর মোহনায় রহমতখালী খালের উপর রেগুলেটর তৈরী করা হয় ১৯৭২ সালেরেগুলেটরের সাহায্যে প্রয়োজন মত পানি বের করা যায়কিন্তু মেঘনার পানি খালে প্রবেশ করার সুযোগ নেই

বর্তমানে মেঘনা নদীতে লবণাক্ততা নেইকিন্তু রেগুলেটরের সাহায্যে খালে পানি প্রবেশের ব্যবস্থা না থাকায় শুকনো মৌসুমে নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলায় সেচের জন্য পানি সংকট দেখা দেয়এজন্য রহমতখালী রেগুলেটরে একটি 'নেভিগেশন লক গেইট নির্মাণ এবং কামতা খালের উপর একটি পাম্প হাউজ নির্মাণ করলে শুকনো মৌসুমে ৯২ হাজার একর জমিতে সেচ সুবিধা পাবেএ প্রকল্পটি সেচ, পানি উন্নয়ন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিনকামতাখালের উপর পাম্প হাউস নির্মিত হলে ডাকাতিয়া নদীর পানি খালের মাধ্যমে ডাবল লিফটিং পদ্ধতিতে পাম্পের সাহায্যে প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করানো সম্ভব হবেবিগত সব সরকার প্রধানরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন সময় এই সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দিলেও আজ পর্যন্ত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কোন লক্ষণ দেখা যায়নি

এখনো একটি সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দূর্ভোগ মোচনের প্রহর গুনে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ভাটি অঞ্চলের ৪০ লাখেরও অধিক মানুষ৫০ বছর ধরে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের অভাবে এলাকাবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নিবঞ্চিত হয়েছে বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লার ৪০ লাখেরও অধিক মানুষজলাবদ্ধতার নির্মম দুর্ভোগের কারণে এ অঞ্চলে কৃষি ও শিল্প খাতে ব্যাপক কোন উন্নতি হয়নি¯^vaxbZvi পর বঙ্গবন্ধু সরকার এর কাজ শুরু করেএর জন্য প্রাথমিক কাজ শুরুর জন্য টাকা বরাদ্দও হয়েছিল কিন্তু পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের সরকারগুলো মানুষের দাবির মুখে বেশ কয়েকবার কাজ শুরুর প্রক্রিয়া দেখালোও অজানা কারণে মাঝপথে ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে আছেবিভিন্ন সময়ে এর বিভিন্ন নামও দেয়া হয়েছেকিন্তু এর কোন কাজই হয়নি১৯৮০-৮১ সালে কামতা ও মজনাঘাট রেগুলেটর তৈরীর মাধ্যমে এলাকায় সেচ উন্নয়নের জন্য লক্ষীপুরের একটি পানি উন্নয়ন বিভাগীয় দফতর চালু করা হয়কিন্তু আজ পর্যন্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের কোন অর্থবহ ভূমিকা নেইনাম পরিবর্তন করে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা জরিপের অজুহাতে ¯^vfvweK নিষ্কাশন ব্যবস্থায় খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় যে সামান্য কিছু কাজ হাতে নেয়া হয়েছিলো তাও এক সময় বন্ধ হয়ে যায়পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত চালু প্রকল্পগুলোর চেয়ে উক্ত প্রকল্পের এলাকাটির সম্পূর্ণ ভিন্নতরঢাকা থেকে ৭০/৮০ কিলোমিটার ভাটিতে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বিস্তৃত মেঘনা নদী বিধৌত ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা পর্যন্ত বিস্তৃত ব-দ্বীপমালা নিয়ে এ প্রকল্পটি তৈরী করা হয়বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার ৪০ লাখেরও বেশী অধিবাসী এ অঞ্চলে বাস করেএরা অকিাংশই কৃষিজীবিমেঘনা ও সাগর বিধৌত এ অঞ্চলের ভূমি অত্যন্ত উর্বরপলি মাটি সমৃদ্ধ এ উর্বর অঞ্চলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি ফসল ফলেপূর্বে মুহূরী সেচ প্রকল্প, পশ্চিমে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প, দক্ষিণে উপকূলীয় বাঁধ বেষ্টিত এলাকার চাষাবাদ এবং বসবাসযোগ্য ভূমির পরিমাণ প্রায় ছয় লাখ একরজলাবদ্ধতা এবং বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস এ অঞ্চরের মানুষের অন্যতম সমস্যাএ জন্য বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ৪০ লাখের বেশী লোক দুর্ভোগ মোচনের প্রহর গুনছে এ সেচ প্রকল্প প্রত্যক্ষ করার জন্যচৌমুহনীর অনেক সড়ক পথে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে, সড়ক পথে মাল পরিবহনের খরচ A¯^vfvweK ভাবে বেড়ে গেছেএর কারণে এই নৌপথের কোন বিকল্প নেইকিন্তু একশ্রেণীর অবৈধ ব্যবসায়ী খালের দিকে তাদের ঘরগুলো সম্প্রসারণ করে পরিবহনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বন্ধ করে দিয়েছেফলে এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাব কেন্দ্রের সঙ্গে এই বিশাল অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার নৌযোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেযার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা কেন্দ্রটির অস্তিত্ব মারাত্মক হুমকির সম্মুখীনঅন্যদিকে খালের উপর অবৈধভাবে দোকানপাট নির্মাণ এবং খালের উপর ছোট ছোট নীচু পোল নির্মাণসহ কোথাও কোথাও পানি চলাচল বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণের কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেফলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এ বিশাল এলাকার নিম্নাঞ্চলে প্লাবন দেখা দিচ্ছেক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তাঘাটপ্রতি বছর নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার একর জমির ফসলচৌমুহনী বড় পুল এলাকাটি তিনটি খালের সংযোগস্থলে অবস্থিতপূর্বদিকে প্রবাহিত হয়েছে চৌমুহনী-ফেনী খাল এবং উত্তরে চৌমুহনী- ছাতারপাইয়া খাল এবং দক্ষিণে নোয়াখালী খালএই তিনটি খাল হচ্ছে বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমএই তিনটি খালের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে অসংখ্য শাখা খালেরবর্ষা মৌসুমে ফেনী সহ নোয়াখালীর পূর্বাঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের চাপ পড়ে উক্ত খালগুলোর উপরউক্ত খালগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে লক্ষীপুরের রহমতখালী খালেরআবার রহমতখালী খালের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে মেঘনার সঙ্গেঅথচ এই গুরুত্বপূর্ণ খালগুলো অর্থাৎ ফেনী-চৌমুহনী-ছাতারপাইয়া ও চৌমুহনী-নোয়াখালী খাল ভরাট করে অবৈধভাবে দোকানপাট বাড়িঘর গড়ে উঠেছেফলে ফেনী ও ছাতারপাইয়ার পানির চাপে বর্ষা মৌসুমে বেগমগঞ্জ ও সেনবাগ ডুবে যায়ডুবে যায় হাজার হাজার একর জমির ফসল, বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট

চৌমুহনী, ফেনী খালের পাশ দিয়ে চলে গেছে চৌমুহনী ফেনী সড়ককিছু ¯^v_©v‡š^lx ব্যক্তি সেই খাল ভরাট করে খালের উপর পুল ও ইটভাটার রাস্তা করার কারণে চৌমুহনীর সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের নৌযোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েসোনাইমুড়ি থেকে চাটখিল রামগঞ্জ হয়ে মহেন্দ্র খালটির সংযোগ রয়েছে মেঘনার শাখা নদী ডাকাতিয়ার সাথেএ শাখা খাল গুলোর জলপ্রবাহ ¯^vfvweK রাখতে এবং সেচ সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে নর্থ-সাউথ ইরিগেশান প্রজেক্ট নামে ¯^vaxbZvi পর একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিলোসে প্রকল্পটিও আজও আলোর মুখ দেখেনি

একসময় চৌমুহনীর মত গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাকেন্দ্রের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ ছাড়াও নৌ যোগাযোগের সুন্দর ব্যবস্থা ছিলনৌপথে খরচ কম ও নানান সুবিধার কারণে ব্যবসায়ীরা সাধারণত নৌপথেই মালামাল পরিবহনে ¯^v”Q›`¨ বোধ করেনকিন্তু খালের অকার্যকরণের ফলে নৌপথ ব্যবহার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেএখন এই অবৈধ বাড়ীঘর ও খালের উপর রাস্তা অপসারণ করে নৌ চলাচলের ¯^vfvweKZv ফিরিয়ে আনলে চৌমুহনীসহ এ অঞ্চলের ব্যবসা কেন্দ্রগুলো চাঙ্গা হয়ে উঠবেউপকৃত হবে নিম্নাঞ্চলের লাখ লাখ কৃষক, রক্ষা পাবে হাজার হাজার একর জমির ফসলাদি প্রতিবছর সংস্কার করতে হবে না হাজার হাজার কিলোমিটার রাস্তাঘাটএ ব্যাপারে জনগণ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে অসংখ্যবার আবেদন নিবেদন করলেও কোনো কার্যকর ফল পাওয়া যায়নি

মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ

গবেষক, গণমাধ্যম কর্মী

e-mail:- mhfoez@gmail.com

দৈনিক প্রথম আলো, ৩১ আগষ্ট, ২০০৮



BACK

No comments:

Post a Comment

About Me

My photo
Mahmudul Huq Foez Free-lance journalist, Researcher.