Scrollwhite

মাহমুদুল হক ফয়েজ My name is Mahmudul Huq Foez, I am a journalist, leaving in a small town, named Noakhali , which is situated in coastalzila of Bangladesh

হোমপেইজ | আর্টিকেল | ছোটগল্প | ফিচার | মুক্তিযুদ্ধ | বনৌষধি | সুস্বাস্থ্য | কবিতা | যোগাযোগ

লেবু






লেবু
Lebu


লেবু
Lebu

মাহমুদুল হক ফয়েজ

উদ্ভিদের নাম : লেবু Lebu
স্থানীয় নাম :লেবু, কাগজী
ভেষজ নাম :Citrus Medica Linn
ব্যবহার্য অংশ : ফল,বীজ ও রস, মূলের ছাল ও পাতা
রোপনের সময় : বর্ষাকাল
উত্তোলনের সময় : সারা বছর উত্তলন করা যায়।
আবাদী/অনাবাদী/বনজ : আবাদী
চাষের ধরণ : আবাদী

লোকায়তিক ব্যবহারঃ-
১। পেটফাঁপায়ঃ- এক্ষেত্রে জামীর, বাতাবী বা কাগজী লেবুর মূলের ছাল চূর্ণ মাতুলুঙ্গের রসে ভাবনা দিয়ে আধা গ্রাম মাত্রায় বটী তৈরী করে রাখতে হবে, প্রয়োজন হলে ঠান্ডা জলসহ প্রত্যহ ৩/৪টি খাওযা যেতে পারে ।এতে পেটফাঁপার উপশম হয়।
২। কামলা বা ন্যাবায়ঃ- শুঁঠ, পিপুল ও মরিচ চূর্ণের (একত্রেগ্রাম) সঙ্গে জামীর লেবুর রস ২/৩ চা-চামচ মিশিয়ে দিনে ২/৩ বার করে খেলে ৪/৫দিনের মধ্যে কামলার প্রশমন যে হচ্ছে, তা লক্ষ্য করা যায়।
৩। পিতুড়ী রোগেঃ- সর্বাঙ্গে ছোট ছোট ফুস্কুড়ি বেরোয়, আঁচিলের মত দেখতে, খুব চুলকোয়, এখানে বুঝতে হবে রসবহ স্রোতে পিত্ত বিকৃত হয়েছে। এক্ষেত্রে শুঁঠ, পিপুল ও মরিচের চূর্ণ একত্রে গ্রাম মাত্রায় জামীর বা গোঁড়া লেবুর রস ২/৩ চা-চামচের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এটি সেরে যায়।
৪। বুকে-পিঠে ফিক্ ব্যথায়ঃ- রসবহ স্রোতে অথবা আমাশয়ে বায়ু হলে হঠাৎ ফিক্ লেগে যায়, সে সময় জামীর লেবুর রস ২ চা-চামচ নিয়ে সেইসঙ্গে যবগাছ পোড়া সাদা ছাইগ্রাম মিশিয়ে খেলে রোগের উপশম হয়।
৫। অম্বলপিত্তশূলেঃ- এ রোগটি একদিনে হয় না, দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চিত হতে হতে প্রকাশ পায়। গলায় আঙ্গুল দিয়ে বমি করলে ব্যথা কমে, ব্যথা না হলেও যা খায়, তাতে গলা বুক জ্বালা করে, পায়খানা কষে যায়, তার সঙ্গে যদি অর্শ থাকে, তাহলে তো রক্ষে নেই। পিত্তপ্রদান হলে দুপুরে ও মধ্যরাত্রে, শ্লেষ্মা প্রধান হলে সন্ধ্যায় ও সকালে এটির শুল বৃদ্ধি পায়। তখন জমীর লেবুর রস ১ চা-চামচ মাত্রায় কাপ জলসহ খেলে অনেক ক্ষেত্রে উপশম হয়।
৬। হিক্কায়ঃ- হিক্কা অনেক কারনে হতে পারে এবং হিক্কা বহু প্রকারের। যেকোন হিক্কায় জামীরের ১ বা ২ চা-চামচ রসে ২/৩টিপ সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে কাপ জলসহ খেলে তৎক্ষনাৎ প্রশমিত হবে। কিন্তু মুমূর্ষর হিক্কায় যেন জামীরের রস কেউ ব্যবহার না করেন।
৭। বমিতেঃ- সাময়িক কারনেও বমি হয় আর আমাশয়ে দুষিত খাদ্যজনিত প্রতিক্রিয়াতেও বমি হয়, তখন খইচূর্ণ ২/৩ চা-চামচ জামীরের রসে মিশিয়ে খেলে অনেক ক্ষেত্রে তৎক্ষনাৎ কমে যায়।
৮। অগ্নিমান্দ্যেঃ- এক্ষেত্রে প্রথম অবস্থায় মরিচচূর্ণ আধা গ্রাম মাত্রায় নিয়ে জামীর বা বাতাবীর রস ২/৩ চা-চামচের সঙ্গে মেড়ে দিনে ২ বার করে কয়েকদিন খেলে অগ্নিমান্দ্যটা আস্তে আস্তে চলে যায়।

৯। ক্রিমিতেঃ- আমাশয়জাত ক্রিমিতে এই যোগটি ব্যবহার্য। জামীর বা বাতাবী গাছের ছালচূর্ণ জামীরের বা বাতাবীর রসে মেড়ে গ্রাম মাত্রায় বটী তৈরী করে রাখতে হবে। সকালে ও বৈকালে ১ বটী করে জলসহ খেলে ক্রিমির উপশম হয়।
১০। অর্শেঃ -অর্শের ভেদ সম্পর্কে এই গ্রনে'র প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ডে বলা হয়েছে। তবে সর্বপ্রকার অর্শে বাতাবী লেবুর কোষ্ঠের ভেতরে যে পাতলা পাতলা পালকের মত কিঞ্জল থাকে, সেগুলিকে নিয়ে (২/৩গ্রাম মাত্রায়) ১ চা-চামচ চিনির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে সেটির উপশম হবে।
১১। শ্লেষ্মার ধাতেঃ- শ্লেষ্মা দেখা দিয়েছে, সেইসঙ্গে গা-হাত-পা জ্বালা, মাথা ভার, তৎক্ষনাৎ মরিচ চূর্ণ গ্রাম মাত্রায় নিয়ে মিষ্টি লেবুর রস ২/৩ চা-চামচের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে মাথা ধরাও যাবে, শ্লেষ্মার উপদ্রবও থাকবে না।
১২। রক্তপিত্তেঃ- বাতাবী বা গোঁড়া লেবুর ফুল ১ গ্রাম মাত্রায় নিয়ে আতপচাল ধোয়া জলসহ বেটে খেলে উপকার হয়।
১৩। মদ্যবিকারেঃ- মাতালের মত্ততা ছাড়াতে অর্থাৎ মাত্রাতিরিক্ত পানের ফলে টলছে বা ভুল বকছে, সে সময় বাতাবী, জামীর, কাগজী বা গোঁড়া লেবুর রস ৫/৭ চা-চামচ মাত্রায় ১ কাপ জলসহ খাইয়ে দিলে কিছুক্ষণ পরে মদ্যবিকার দূরীভূত হবে।
বাহ্য প্রয়োগঃ-
১৪। ক্রিমিজন্য দন্তশূলে:- কুখাদ্য বা সঞ্চিত খাদ্যের টুকরা দাঁতের গোড়ায় জমতে জমতে মাড়িতে একপ্রকার পোকা হয় এবং সেগুলি কামড়ালে শূল হয়। তখন বাতাবী বা গোঁড়ালেবু গাছের ছাল চূর্ণ করে মাজন হিসাবে দুবেলা ব্যবহার করলে পোকায় খাওয়া দাঁতের ব্যথা কমে যাবে।
১৫। পিত্তজ শিরোরোগেঃ- মাথা যেন ফেটে যাচ্ছে, জ্বালা, জল ঢালতে ইচ্ছে করছে, সেক্ষেত্রে বাতাবী বা কমলা লেবুর রস ঘিয়ের সঙ্গে ফেটিয়ে দুধারের রগে বা কপালে প্রলেপ দিলে ব্যথা কমে যায়।
১৬। তালুশোথেঃ- এ রোগটি শিশুদের হয়, তালুতে অর্থাৎ মাথার মাঝখানটায় তপ্ তপ্ করে, মায়েরা সেখানে সরষের তেল দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বাতাবী ফুলের পাঁপড়ি বেটে ন্যাকড়ার জড়িয়ে মাথায় দিলে দিন দুয়েকের পর থেকে ওটা কমতে থাকে।
১৭। কর্ণশূলেঃ- অনেক কারনে এটি হয়। বাতাবী জামীর বা কমলালেবুর রস ছেকে ফোঁটা ফোঁটা করে দিলে কমে যায়।
সূত্র-
চিরঞ্জীব বনৌষধী
আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য
৩য়-খন্ড, পৃষ্ঠা-২৫৮


মাহমুদুল হক ফয়েজ
মুঠোফোনঃ ০১৭১১২২৩৩৯৯
e-mail:- mhfoez@gmail.com

No comments:

Post a Comment

About Me

My photo
Mahmudul Huq Foez Free-lance journalist, Researcher.