Scrollwhite
!#bdb76b>
হোমপেইজ | আর্টিকেল | ছোটগল্প | ফিচার | মুক্তিযুদ্ধ | বনৌষধি | সুস্বাস্থ্য | কবিতা | যোগাযোগ !darkslategrey>!#bdb76b>
ব্যাঙের ছাতা
ব্যাঙের ছাতা
Mushroom
মাহমুদুল হক ফয়েজ
উদ্ভিদের নাম : ব্যাঙের ছাতা, Mushroom. বাংলায় ব্যাংঙের ছাতা, ভূঁইছাতা, কোড়ক ছাতা, ছত্রাক, পলছত্রাক, ভুঁইছাতি, ছাতকুড় প্রভৃতি নামে পরিচিত, হিন্দিতে ছাতা, ভুঁইছত্তা, ভুঁইফোড়ছত্তা, ছতোনা, সাপের ছাতা, খুমী, ধরতীফুল প্রভৃতি।
স্থানীয় নাম :ব্যাঙের ছাতা
ভেষজ নাম : Agaricus camestris Linn. (Family-Agaricaceae)
ব্যবহার্য অংশ : সমগ্র উদ্ভিদ
রোপনের সময় : চাষ করার উপযুক্ত সময় সমতলে আগষ্ট থেকে মার্চ মাস এবং পাহাড়ী জায়গায় মার্চ-অক্টোবর মাস।
উত্তোলনের সময় : একবার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে নিয়মিত সার দিয়ে গেলে তা থেকে ৭/৮মাস পাওয়া যায়।
আবাদী/অনাবাদী/বনজ : বর্ষাকালে আপনা-আপনি মাটি ভেদ করে এই ছাতা জন্মে। এটি পাহাড়ী ও সমতলভূমিতে পচাপাতা, খড়, গোবর থেকেও বর্ষাকালে জন্মে। জলাশয়ের কাছাকাছি সেঁতসেঁতে ভূমিতেও হয়ে থাকে।
চাষের ধরণ : তাপনিয়ন্ত্রন করতে পারলে সারা বৎসর তৈরী করা কোন কষ্টকর ব্যাপার নয়। একবার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে নিয়মিত সার দিয়ে গেলে তা থেকে ৭/৮মাস ছত্রাক পাওয়া যায়। বর্তমানে কৃত্রিমভাবে সারা বৎসর ধরে তৈরী করা হচ্ছে। বীজ ছড়ানোর ১৫-২০ দিনের মধ্যে ছত্রাক তৈরী আরম্ভ হয় এবং ৪/৫দিন ধরে প্রচুর পরিমাণে হতে থাকে।
উদ্ভিদের ধরণ: কেবল একটি সাদা রঙের কান্ড মাটি ভেদ করে ওঠে, কান্ডের মাথায় থাকে বর্তুলাকার ছাতা, এটি প্রথমাবস্থা। পরে, সেটি প্রস্ফুটিত হয়ে ছাতার আকার ধারেন করে। কন্দ থেকে যে কান্ডটি বেরোয় সেটি উপরের দিকে ক্রমশ সরু, ৬/৭ ইঞ্চি পর্যন্ত সাধারনতঃ লম্বা হয়, কান্ডটিকে ডাঁটাও বলা হয়ে থাকে। ডাঁটার মাথায় যে ছাতাটি থাকে, সেটির নীচের দিকে মাছের ঝিল্লির মত পাতলা পর্দা থাকে এবং তাতে বীজানুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই ছাতার নীচের দিকে ডাঁটাতে একটা পাতলা পর্দামত আবরণ থাকে, সেটি প্রথমাবস্থায় ডাঁটার সঙ্গে অনেকটা মিশে থাকে, ছাতাটি সম্পূর্ণ পরিস্ফুট হওয়ার সময় ঐ আবরণটি একটু ঝুলে পড়ে, দেখলে মনে হয় মসৃন কান্ডের উপরের দিকে যেন একটি আলগা ধরনের গাঁট। এটিকে গিল(Gill) বলা হয়।
পরিচিতি: সংস্বেদজ ছত্রাক/শাকটি বাংলায় ব্যাংঙের ছাতা, ভূঁইছাতা, কোড়ক ছাতা, ছত্রাক, পলছত্রাক, ভুঁইছাতি, ছাতকুড় প্রভৃতি নামে পরিচিত, হিন্দিতে এটিকে ছাতা, ভুঁইছত্তা, ভুঁইফোড়ছত্তা, ছতোনা, সাপের ছাতা, খুমী, ধরতীফুল প্রভৃতি বলে। মাংসের মত স্বাদ বিশিষ্ট, পুষ্টিকর, প্রস্রাবকারক, মৃদু বিরেচক। এতে আমিষ, শর্করা ও চর্বিজাতীয় পদার্থ থাকে।
ঔষধি গুনাগুন :মাংসের মত পৌষ্টিক গুনযুক্ত, কামবর্ধক ও মৃদু বিরেচক। এই ছত্রাক থেকে নানাপ্রকার ভিটামিন, ঔষধ, বাণিজ্যিক দ্রব্যও তৈরী হয়।
১। কোষ্ঠবদ্ধতায়:- দু’একদিন অন্তর অন্তর দাস্ত হয়, মল গুটলে গুটলে, দাস্ত পরিস্কার হবার ঔষধ খেলে ২/১দিন ভাল হলো, তারপর যেইকে সেই, সেক্ষেত্রে ভাজা ছাতু আন্দাজ ২৫ গ্রাম মাত্রায় দিনে ২ বার করে ভাতের সঙ্গে বা অন্য যেকোন সময়ে ৫/৭ দিন খেলে ওটা চলে যায়। তবে মাঝে মাঝে খেয়ে রাখলে খুব ভাল হয়।
২। আমাশয়ঃ- সাদা আমাশা, কখনো শক্ত মলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে, দাস্ত পাতলা হলে তার সঙ্গে থোকা থোকা আমও পড়ে, এক্ষেত্রে ভাজা ছাতু বা ছাতা আন্দাজ ২৫ গ্রাম মাত্রায় নিয়ে দিনে ২ বার করে খেতে হবে। এটি ব্যবহারকালীণ আমাশা বৃদ্ধিকারক কোন দ্রব্য, যেমন পুঁইশাক, গুরুপাক দ্রব্য, অতিরিক্ত শাক বা তরকারী খাওয়া চলবে না। এভাবে নিয়ম মেনে ১০/১৫ দিন খেলে আমাশা চলে যায়।
৩। দৌর্বল্যেঃ- রোগান্তিক দুর্বলতা অর্থাৎ কোন রোগভোগের পর দুর্বলতা বা অপুষ্টিজনিত দুর্বলতা যেটাই হোক না কেন, এ অবস্থায় ভাজা ছাতু ২৫ গ্রাম মাত্রায় দিনে ২ বার করে খেতে হবে। খাওয়ার পর এক কাপ করে গরম দুধ খাওয়া দরকার। মাসখানিক খেলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।
৪। সন্তোগশক্তির স্বল্পতায়ঃ- এটি বার্ধক্যের শেষ এসে দেখা দিলে তখন অবশ্য করার কিছুই নাই। যৌবনে ও প্রৌঢ়াবস্থায় এই শক্তির অভাব হলে মানসিক অস্বাচ্ছন্দ্যবোধের জন্ম হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ভাজা ছাতু বা ছাতা ২৫ গ্রাম মাত্রায় দিনে ২ বার করে কিছুদিন খেতে হবে। ২/৩ মাস খেলে চমৎকার কাজ হয়ে থাকে।
দাঁতের মাড়িতে লাগালে মুখক্ষত ও অতিরিক্ত লালাস্রাব চলে যায়। রক্তবোধক হিসেবেও ব্যবহার্য। অতিসার ও আমাশাতে আভ্যন্তরীন ব্যবহার হয়ে থাকে।
ছাতু তৈরীঃ-
ছত্রাক কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, তা বিশেষভাবে জেনে রাখা দরকার। তাজা ছাতু বা ছাতা তুলে এনে প্রথমে কন্দমুলটা কেটে বাদ দিয়ে কান্ড বা ডাঁটাটা কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। ছাতাটা ছোট ছোট করে টুকরো তৈরীর সময় ছাতার উপরের ধুসর রঙের পাতলা আবরণটিকে বাদ দিতে হবে। এর পর সমস্ত টুকরোগুলিকে ভালভাবে জলে চটকে ধুয়ে নিংড়ে সেই ছাতাতে প্রয়োজনমত লবন ও হলুদ মিশিয়ে কিছুক্ষন রাখার পর পুনরায় নিংড়ে জলটা ফেলে দিতে হবে। এরপর ঐ নিংড়ানো ছাতুকে বিভিন্ন প্রক্রিয়াতে, যেমন তেলে ভেজে, একক বা একাধিক সবজির সঙ্গে মিশিয়ে তরকারি প্রস্তুত করে, সামান্য অম্ল ও চিনি সহযোগে চাটনী বানিয়ে খাওয়া যায়।
চিরঞ্জীব বনৌষধী
আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য
মাহমুদুল হক ফয়েজ
মুঠোফোনঃ ০১৭১১২২৩৩৯৯
e-mail:- mhfoez@gmail.com
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment