Scrollwhite

মাহমুদুল হক ফয়েজ My name is Mahmudul Huq Foez, I am a journalist, leaving in a small town, named Noakhali , which is situated in coastalzila of Bangladesh

হোমপেইজ | আর্টিকেল | ছোটগল্প | ফিচার | মুক্তিযুদ্ধ | বনৌষধি | সুস্বাস্থ্য | কবিতা | যোগাযোগ

বকুল


বকুল



উদ্ভিদের নাম: বকুল
স্থানীয় নাম: বকুল
বোটানিক্যাল নামঃ- Mimusops elengi Linn
ফ্যামিলি নামঃ- Sapotaceae
ভেষজ নাম: Mimusops
ব্যবহার্য অংশ: গাছ বা মূলের ছাল, কাঁচা ও পাকা ফল, ফুল ও বীজ
রোপনের সময়: বর্ষাকালে ডাল অথবা বীজ থেকে চা্রা করে রোপন করতে হয়।
উত্তোলণের সময়: গ্রীষ্মকাল থেকে শুরু করে শরত কাল পযন্ত গাছে ফুল আসে। তাছাড়া কোনো কোনো গাছে সারা বছর ফুল হয়।
আবাদী/অনাবাদী/বনজ: আবাদী অনাবাদী ও বনজ সব ধরনের হয়ে থাকে।


চাষাবাদের ধরণ: নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এ গাছের আধিক্য দেখা যায়। এটি চির হরিৎ বৃক্ষ। সাধারনতঃ ৪০/৫০ ফুট উঁচু হয়। ছায়াতরু হিসাবে রাস্তার পাশে এবং মন্দির প্রাঙনে রোপন করা হয়।

এটি মাঝারি আকারের গাছ এবং এর পাতা গুলি হয় ঢেউ খেলানো। ফুল গুলো খুব ছোট হয়। বড় জোড় ১ সেঃ মিঃ। ফুল গুলো দেখতে ছোট ছোট তারার মতো। বকুল ফুলের সুবাসে থাকে মিষ্টি গন্ধ। ফুল শুকিয়ে গেলেও এর সুবাস অনেক দিন পর্যন্ত থাকে।
বকুল ফুল, ফল, পাকা ফল, পাতা, গাছের ছাল, কাণ্ড, কাঠ সব কিছুই কাজে লাগে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে এর ব্যবহার রয়েছে।

উদ্ভিদের ঔষধি গুণাগুণ:- বকুলের ফল থেকে উৎকৃষ্ট মদ তৈরী হয়। এ ছাড়া শ্বেতীরোগ, দাঁতেরপোকা রোগ, মাথার যন্ত্রনা, শিশুদের কোষ্ঠবদ্ধতায় পুরাতন আমাশয় শুক্র তারল্য ইত্যাদি রোগে ঔষধি গুনাগুন রয়েছে।পাকা ফল খাওয়া যায়। মালয়'রা বকুল ফল সংরক্ষণ করে রাখে এবং আচার তৈরি করে।

মুত্রশিথিলতায়ঃ যাদের মুত্রবেগ কখনো ঢিলে কখনো কষা হয় এক্ষেত্রে বকুলছাল ১০ গ্রাম একটু করে কুটে থেঁতো করে ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ২ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে সেটাকে সকাল, বিকাল ও রাত্রে ৩ বার খেতে হবে। এর ফলে কারো কারো কোষ্ঠবদ্ধতা হতে পারে। তাহলে ৫ গ্রাম ওজনে নিয়ে একটু থেঁতো করে ৩ কাপ পানিতে সিদ্ধ করার পর ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ৩ বার খেতে হবে। প্রত্যহ আহারের পর ১ চা চামচ করে ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে ১৫/২০ দিন খেলে অপুষ্টি জনিত শুক্রতারল্য সেরে যায়।

সিরাপের প্রস্তুত প্রনালিঃ- পাকা বকুল ফল ৫০০ গ্রাম, ছোট ফল হলে ৭৫০ গ্রাম নিয়ে চটকে বীজ ও খোসা বাদ দিয়ে ২৫০ গ্রাম মধু মিশিয়ে ৩ দিন ঢেকে রাখতে হবে। তারপর এঝটা পাতলা ন্যকড়ায় পুটলি করে টানিয়ে রাখতে হবে। তা থেকে ফোঁটা ফোঁটা করে ঝরে পড়বে। এটাই হলো বকুল ফুলের সিরাপ।

শ্বেতী রোগেঃ- সব শ্বেতীর রং একরকম হয়না। যার রং দুধের মত সাদা হয়ে গিয়েছে সগুলি দুঃসাধ্য বলা চলে।এই রকম সাদা দাগ একটু মেদযুক্ত লোকের বেশী হয়। রোগা লোকের সাধারনতঃ বেশী হয়না। আর যে দাগ গুলি একটু লালচে বা তামাটে রঙের, সগুলি সকলের হ’তে পারে।
এ ক্ষেত্রে বকুল ছালের ঘন ক্বাথে বকুল বীজ ঘষে ঐ দাগে আস্তে আস্তে ঘসে লাগাতে হবে। এর দ্বারা ঐ দাগগুলি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে।

ঘন ক্বাথ কি করে করতে হয়ঃ- ১০০ গ্রাম ছালকে কুটে এক লিটার পানিতে সিদ্ধ করে আধ লিটার থাকতে নামিয়ে ছেঁকে তাকে পুনরায় ঘন করে আধ ছটাক আন্দাজ রাখতে হবে। সেটাই হলো ঘন ক্বাথ। এই ঔষধ ব্যবহার কালে নিরামিষ খাওয়া ভাল। যদি না মানা সম্ভব হয় তাহলে অন্ততঃ রবিবারে আমিষ ভোজন একেবারে নিষেধ।

দাঁতের পোকায়ঃ- দাঁতের মধ্যখানে গর্ত হয়ে যায় অথচ ধার ঠিক থাকে। সে ক্ষেত্রে বকুল ছাল ১০ গ্রাম নিয়ে থেঁত করে ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে সকালে ও রাত্রে প্রত্যহ ২ বার ক্বাথটা মুখে পুরে ১০/১৫ মিনিট রেখে ফেলে দিতে হবে। প্রতিবার ৭/৮ চা-চামচ পরিমান নিতে হবে। এই রকম ১০/১৫ দিন ব্যবহার করলে পোকায় আর দাঁত নষ্ট করবেনা।

মাথার যন্ত্রনায়ঃ-বকুল ফুলের গুঁড়োর আট ভাগের এক ভাগ ফিটকিরির গুঁড়ো মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। সর্দি হয়ে সে সর্দি বসে মাথার যন্ত্রনা হলে এই নস্যিটা ব্যবহার করলে যন্ত্রনা সেরে যাবে।

দাঁত পড়ায়- অল্প বয়সে যাঁদের দাঁত নড়ে যাছে বা পড়ে যাছে তারা কাঁচা বকুল ফল কিছুদিন চিবুলে দাঁতের গোড়া শক্ত হয়ে যাবে।তা না হলে কাঁচা ফলকে পেড়ে শুকিয়ে সেই শুকনো ফলের শাঁসের গুঁড়ো দিয়ে দাঁত মাজলে অকালে আর দাঁত পড়া ও নড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

নাসা জ্বরেঃ- এ জ্বরে সাধারনতঃ মাথা ও ঘাড়ে যন্ত্রনা সহ সারা দেহে ব্যথা বেদনা হয়। এ ক্ষেত্রে বকুল ফুলের চূর্ণের নস্যি নিলে সেরে যায়।

শিশুদের কোষ্ঠ বদ্ধতায়ঃ- বকুল বীজের অভ্যন্তরেরটা বাদ দিয়ে শক্ত অংশটা মিহি চূর্ণ করে পুরাতন ঘি এর সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেটাকে পানের পানের বোঁটায় লাগিয়ে শিশুর মলদ্বারে দিলে ১০/১৫ মিনিটের ভিতর কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়ে যায়।তারপর কোনো স্নেহ জাতীয় দ্রব্য যেমন নারকেল তেল বা ঘি লাগিয়ে দিতে হয়।

পুরাতন আমাশয় রোগেঃ- প্রত্যহ কয়েকটি পাকা বকুল ফলের শাঁস খেলে এ রোগের উপশম হয়।

ছবিঃ- সংগ্রহ ও উইকিপিডিয়া






সূত্রঃ
চিরঞ্জীব বনৌষধী
আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য
২য় খন্ড, পৃষ্ঠা-২৬৪


মাহমুদুল হক ফয়েজ
মুঠোফোনঃ ০১৭১১২২৩৩৯৯
e-mail:- mhfoez@gmail.com

No comments:

Post a Comment

About Me

My photo
Mahmudul Huq Foez Free-lance journalist, Researcher.