সজনে
Sojne
উদ্ভদিরে নাম : সজনে
স্থানীয় নাম : সজনে
ভেষজ নাম : Moringa Oleifera.
ফ্যামিলিঃ-
ব্যবহার্য অংশ : এই গাছটির ফল, মূল, পাতা, গাছের ও মূলের ছাল (ত্বক্) ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
রোপনরে সময় : বর্ষাকাল
উত্তোলনরে সময় : বছররে যে কোনো সময় উত্তোলন করা যায়।
আবাদী/অনাবাদী/বনজ : আবাদী, অনাবাদী বনজ সব ধরনরে হয়ে থাকে।
চাষের ধরণ : বীজ ও কলম থেকে গাছ উৎপন্ন হয়
উদ্ভিদের ধরণ: বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ।
পরিচিতি
বিভিন্ন অংশের ব্যবহার
১। সজনের পাতা:- শাকের মত রান্না করে (কিন্তু ভাজা নয়) আহারের সময় অল্পপরিমাণে খেলে অগ্নিবল বৃদ্ধি হয় ও আহারে প্রবৃত্তি নিয়ে আসে, তবে পেটরোগাদের ঝোল করে অল্প খাওয়া ভাল। এটা গরীবের খাদ্য, কারন তার মধ্যে আছে ভিটামিন এ.বি.সি নিকোটিনিক এসিড, প্রোটিন, চর্বিজাতীয় পদার্থ, কর্বোহাইড্রেট এবং শরীরের পোষণ-উপযোগী আরও প্রয়োজনীয় উপাদান, এসব তথ্য নব্য বৈজ্ঞানিকের সমীক্ষায় যানা গেছে। এই শাক কোল, ভীল, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসিদের নিত্য প্রিয় ভোজ্য শাক।
২। সজনের ফুল:- শাকের মত রান্না করে বসন্তকালে খাওয়া ভাল। এটা একটা বসন্তপ্রতিষেধক দ্রব্য। সর্দিকাসির দোষে, শোথে, প্লীহা ও যকৃতের কার্যকারিত্ব শক্তি কমে গেলে, ক্রিমির আধিক্য থাকলে এবং টনিকের একটি অন্যতম উপাদান হিসাবে ইউনানি চিকিৎসক সমপ্রদায় এর শুষ্কফুল ব্যবহার করেন।
৩। সজনের ফল (ডাঁটা):- “ধুকড়ির মধ্যে খাসা চালের” মত আমাদের দেশে সজনের ডাঁটা। নব্য বৈজ্ঞানিকের বিশ্লেষণ বিচারে পাতা ও ফল (ডাঁটা) অল্পাধিক সমগুণের অধিকারী হলেও ডাঁটাগুলি Amino Acid সমৃদ্ধ, যেটা দেহের সাময়িক প্রয়োজন মেটায়। সর্বক্ষেত্রে সব দ্রব্যেরই ব্যবহার করা উচিত পরিমিত ও সীমিত। উইনানী চিকিৎসকগণের মতে- বাত ব্যাধি রোগগ্রস্ত ব্যক্তিদের ও যাঁরা শিরাগত বাতে কাতর, তাঁদের আহার্যের সঙ্গে এটি ব্যবহার করা ভাল।
৪। বীজের তেল:-এদেশে সজনের বীজের তেলের ব্যবহার হয় না, তাই পরীক্ষাও তেমন হয়নি, তবে আমাদের এ দেশের বীজের তেমন তেল পাওয়া যায় না, আমদানী হয় আফ্রিকা থেকে- নাম তার ‘বেন অয়েল’। ঘড়ি মেরামতের কাজে লাগে, বাতের ব্যথায়ও মালিশে ভাল কাজ হয়। এ ভিন্ন গাছের ও মূলের (ত্বক) গুণের অন্ত নেই।
রোগ নিরাময়েঃ
১। হাই ব্লাড প্রেসারঃ সজনের পাকা পাতার টাটকা রস (জলে বেটে নিংড়ে নিতে হবে) দুই বেলা আহারের ঠিক অব্যবহিত পূর্বে ২ বা ৩ চা-চামচ করে খেলে সপ্তাহের মধ্যে প্রেসার কমে যায়। তবে যাঁদের প্রস্রাবে বা রক্তে সুগার আছে, এটা খাওয়া নিষেধ
২। অর্বুদ রোগে (Tumour): ফোঁড়ার প্রথমাবস্থায় গ্রন্থিস্ফীতিতে (Glandular swelling) অথবা আঘাতজনিত ব্যথা ও ফোলায়- পাতা বেটে অল্প গরম করে লাগালে ফোঁড়া বা টিউমার বহুক্ষেত্রে মিলিয়ে যায় এবং ব্যথা ও ফোলার উপশম হয়।
৩। সাময়িক জ্বর বা জ্বরভাবে:- এর সঙ্গে সর্দির প্রাবল্য থাকলে অল্প দুটো পাতা ঝোল করে বা শাক রান্না করে খেলে উপশম হয়।
৪। হিক্কায় (Hiccup):- হিক্কা হতে থাকলে পাতার রস ২/৫ ফোঁটা করে দুধের সঙ্গে ২/৩ বার খেতে দিলে কমে যায়।
৫। অর্শে (Piles):- অর্শের যন্ত্রনা আছে, অথচ রক্ত পড়ে না- এ ক্ষেত্রে নিন্মাঙ্গে তিলতৈল লাগিয়ে পাতা-সিদ্ধ ক্কাথ দ্বারা সিক্ত করতে হবে।
৬। সন্নিপাত জন্য চোখে ব্যথা, জল বা পিচুটি পড়াঃ- এ সব ক্ষেত্রে পাতা- সিদ্ধ জল দিয়ে ধুইলে উপকার পাওয়া যায়।
৭। দাঁতের মাড়ি ফোলায়ঃ- শ্লেস্মাঘটিত কারনে দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে পাতার ক্কাথ মুখে ধারন করলে উপশম হয়।
৮। কুষ্ঠে (Leprosy):- কুষ্ঠের প্রথম অবস্থায় বীজের তৈল ব্যবহার করতে পারলে ভাল হয়। অভাবে বীজ বেটে কুষ্ঠের ক্ষতের উপর প্রলেপ দিলেও চলে।
৯। অপচী রোগে (Scrofula):- সজনেবীজ চূর্ণ করে নস্য নিতে হয়।
মাহমুদুল হক ফয়েজ
মুঠোফোনঃ ০১৭১১২২৩৩৯৯
e-mail:- mhfoez@gmail.com
No comments:
Post a Comment