Scrollwhite

মাহমুদুল হক ফয়েজ My name is Mahmudul Huq Foez, I am a journalist, leaving in a small town, named Noakhali , which is situated in coastalzila of Bangladesh

হোমপেইজ | আর্টিকেল | ছোটগল্প | ফিচার | মুক্তিযুদ্ধ | বনৌষধি | সুস্বাস্থ্য | কবিতা | যোগাযোগ

তথ্য প্রাপ্তি প্রকাশ কিংবা উন্মোচন

তথ্য প্রাপ্তি প্রকাশ কিংবা উন্মোচন
মাহমুদুল হক ফয়েজ

ব্যাক্তি থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের তথ্যের উপর নির্ভর করতে হয়। এই তথ্যকে নির্ভর করে আমারা পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করি। সেই তথ্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ নাহলে আমাদের পদে পদে পড়তে হয় ভোগান্তিতে। সম্প্রতি উইকিলিকস তার ওয়েবসাইটে আমেরিকান সরকারের গোপন তথ্য ফাঁস করে দুনিয়া জুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছে। মজার ব্যপার হলো ফাঁস করা তথ্যগুলোর কোনটিই উইকিলিকসের নিজস্ব কোনো তথ্য নয়। সব গুলোই বিভিন্ন দেশের কম্পিউটারে থাকা নানান গোপন নথিপত্র। এই নথিপত্রের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কযুক্ত। বিশেষ করে যা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত। এই তথ্য ফাঁস কিংবা উন্মোচনকে ঘিরে উইকিলিকসকে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখিও হতে হয়েছে। আমরা জানি কম্পিউটারে রাখা যে কোনো তথ্য গোপন রাখতে হলে শক্তিশালী গোপন পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখতে হয়। এখন অনেকেরই প্রশ্ন উইকিলিকস কি করে এত শক্তিশালী গোপন নথিগুলোর খোঁজ পেলো। যা বেশির ভাগই রাজনৈতিক । তবে অনেকেই মনে করেন তথ্য গুলো আমেরিকার দূতাবাসই উন্মোচন করেছে। তারাই তাদের সুবিধা মত সময়ে তাদের প্রয়োজনেই তথ্যগুলো ফাঁস করে দিয়েছে। এই তথ্য ফাঁসের ঘটনায় আমেরিকা সরকারের বা সে দেশের কোনো নেতার কোনো আসুবিধা হয়নি। কিন্তু নানান প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে আমদের মত দেশের নেতাদের। সর্বশেষ যে বিপুল সংখ্যক তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে তাতে বাংলাদেশের বর্তমান শাসক দল ও বিরোধী দলের বেশ কিছু নেতা সম্মন্ধে মন্তব্য করা হয়েছে। যা আমেরিকান দূতাবাসের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতদের রিপোর্ট রয়েছে। এই রিপোর্টগুলো বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রদূতেরা সময় সময় তাদের দেশে গোপন তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন। এই তথ্যগুলো দেখে সরকারি বিরোধী উভয় পক্ষই বেজায় নাখোশ হয়েছেন। কেউ কেউ এটাকে নেহায়েত ছেলেমি বা ছেলেখেলা বলে বাতিল করে দিয়েছেন। বিষয়টিকে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ছেলেখেলার সাথে তুলনা করায় অনেকে বেশ মজাও পেয়েছেন। যেমন ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা খেলতে খেলতে কারো কারো সাথে খুব প্রগাড় ভাব হয়ে যায়। তখন তারা একে অন্যের কাছে গোপন কথা বলে ফেলে। আবার নিজেদের ভিতর চুক্তি করে সেই গোপন কথাটি যেন কারো কাছে প্রকাশ না করা হয়। এক সময় নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেলে তারা অন্যের কাছে সেই গোপন কথাটি বলে দেয়। আবার কেউ আড়ালে আবডালে সেই তথ্য জেনে ফেললে সে সেটা মজা করার জন্য প্রকাশ করে দেয়। তখন ঘটে বিপত্তি। এটি ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের একটা মজার খেলাও বটে। গোপন কথাটি আর গোপন থাকছেনা। যেন, ‘গোপন কথাটি রবেনা গোপনে’। সেই নেতাদের মতে উইকিলিকস সেই ছেলেমির কাজটিই করেছে। কিন্তু রাষ্ট্র বা সরকারি তথ্য তো আর ছেলেখেলা নয়। একে আমাদের আবশ্যই গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। তবে সারা দুনিয়ার মানুষ উইকিলিকসের এই কর্মকান্ডে যে একটা মজা পাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। এখন রাষ্ট্রের অনেক কর্ণধার তটস্থ হয়ে আছেন কখন কোন গোপন তথ্য বেফাঁস হয়ে যায়।

উইকিলিকসের কল্যানে ‘না চাহিতে যারে পাওয়া যায়’ এর মত রাশি রাশি তথ্য আমাদের সামনে উন্মোচিত হলেও আমদের দেশের সরকারি বেসরকারি প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া খুবই দুরহ । বিশেষ করে সরকারি যে কোনো তথ্য পেতে সাধারন মানুষ তো বটেই ঝানু সাংবাদিকদেরও গলদঘর্ম হয়ে যায়। তথ্য না দেয়ার সংস্কৃতি আমাদের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। তবে মফস্বল অঞ্চলের সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হোল তাদের সরকারি বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে সুসম্পর্ক। এ অঞ্চলের সাংবাদিকরা এ বিষয়ে বেশ সুবিধা জনক অবস্থানে আছেন। নতুন তথ্য আইনে তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে পদ্ধতির বিধান রয়েছে তাতে অনেক দীর্ঘসূত্রিতার জালে পড়তে হয়। জেলার অনেক সাংবাদিকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এখানে কোনো সাংবাদিকই এ পর্যন্ত দরখাস্ত করে কোনো তথ্য নেয়নি। স্থানীয় সাংবাদিকরা ব্যাক্তিগত সম্পর্কের সুবাদে তাৎক্ষনিক ভাবেই তথ্য পেয়ে থাকেন। এখন পর্যন্ত তথ্য পেতে কারো কোনো আসুবিধা হয়েছ বলে জানা যায়নি।

সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে সাধারণ নাগরিকদের জন্য তথ্যপ্রদানের যে বিধান তথ্য আইনে বলা আছে তা সরকারি কোনো দপ্তরে দেখা যায় না। সরাকারি বেসরকারি অফিস গুলো তথৈবচ অবস্থায় আছে। তাই সাধারণ জনগনের তথ্য পেতে আগের মতই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

এখন আমরা ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছি। সরকারি সকল তথ্যকে ডিজিটাল করার প্রকৃয়াও শুরু করার নির্দেশ আছে। প্রতি জেলায় তথ্য বাতায়নের ওয়েবসাইট করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো এখনও তেমন সমৃদ্ধ হয়নি। অথচ তথ্যবাতায়নে তথ্যের ভান্ডার গড়ে তুলতে পারলে জনগনের ভোগান্তি অনেক কমে যাবে।

একটি গণতান্ত্রিক কল্যান রাষ্ট্র গড়ে তুলতে অবাধ তথ্য প্রবাহের কোনো বিকল্প নেই। আশা করি বহুবার উচ্চারিত এই কথা গুলো আমরা বারবার স্বরণ করব।

মাহমুদুল হক ফয়েজ
সংবাদকর্মী, গবেষক
e-mail- mhfoez@gmail.com

No comments:

Post a Comment

About Me

My photo
Mahmudul Huq Foez Free-lance journalist, Researcher.